শিক্ষা নিতে হবে আবু সাঈদের মৃত্যু থেকে

নাহিদ হাসান আফ্রিকা  

দুইটি ছবি একজন লোকের।একটি ছবি জীবিত অবস্থায় আরেকটি ছবি মৃত অবস্থায়।

লোকটির নাম আবু সাঈদ।বাংলাদেশে তার বাড়ি মুন্সিগঞ্জের লৌহজং হলেও তিনি দক্ষিণ আফ্রিকার জোহানেসবার্গে থাকতেন বিগত ১৭/১৮ বছর ধরে।গত ১৯ ডিসেম্বর রাতের কোন একসময় তার মৃত্যু হয়েছে।

এই লোকটির মৃত্যু পর জোহানেসবার্গের কোন বাংলাদেশী নাগরিক ইন্না-লিল্লাহ পড়েনি।এই লোকটির মৃত্যুর পর কোন বাংলাদেশী লাশটা নিয়ে দাফন করতে আসেনি?মৃত্যুর পর লাশ পড়েছিলো আরো ৭/৮ ঘন্টা।সবশেষে সাংবাদিক এসএইচ মুহাম্মদ মোশাররফ ও শাহেদ ভাইয়ের সার্বিক সহযোগিতায় টাকা তুলে লাশটি জোহানেসবার্গে দাফন হয়েছে।এছাড়াও লাশটি দাফনের জন্য বিভিন্ন ভাবে সহযোগিতা করেছেন মুহাম্মদ সৌরভ ভাই। কারণ আবু সাঈদের লাশটি তার বাড়িতে গ্রহন করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন তার পরিবার।

কিন্তু কেন?কি ছিলো আবু সাঈদের অপরাধ?কেন তার মৃত্যুতে অন্য কোন প্রবাসী বাংলাদেশি এগিয়ে আসলোনা?কেন তার পরিবার তার লাশ দেশে পাঠাতে নিষেধ করলো? এসব বিষয় গুলো আমরা তদন্ত করে জানার চেষ্টা করেছি।মৃত আবু সাঈদের ব্যাপারে জোহানেসবার্গের বাংলাদেশীরা জানিয়েছেন ভয়ংকর তথ্য।
যদিও মৃত মানুষের সমালোচনা করা উচিত নয় তারপরও অন্য বাংলাদেশী যারা দক্ষিণ আফ্রিকায় আবু সাঈদের মতো অপকর্মে লিপ্ত রয়েছে তাদের মৃত্যুর আগে যেন সংশোধন হতে পারে সেই জন্য আবু সাঈদের কিছু স্মৃতিচারণ করতে বাধ্য হলাম।

মৃত আবু সাঈদের দক্ষিণ আফ্রিকায় কোন দোকান কিংবা ব্যবসা বানিজ্য ছিলনা।আবু সাঈদ পেশায় একজন দালাল ছিলেন।সবচেয়ে নিকৃষ্ট একজন দালাল ছিলেন আবু সাঈদ।সেই সাথে পুলিশ এবং ইমিগ্রেশনের সাথে সম্পর্ক করে গ্রেপ্তারের ভয় দেখিয়ে কিংবা কোন সময় দোকানে ইমিগ্রেশন পুলিশ পাঠিয়ে নানা অজুহাতে আঠক করে নিয়ে যেতেন সাধারণ বাংলাদেশীদের।এর পর মোটা অংকের অর্থের বিনিময়ে ছেড়ে দিতেন তাদের৷এই ভাবে দিনের পর দিন,মাসের পর মাস বছরের পর বছর সাধারণ বাংলাদেশী নাগরিকদের হয়রানি করতেন আবু সাঈদ।আরো হাজারো অভিযোগ রয়েছে আবু সাঈদের বিরুদ্ধে।এইভাবে আবু সাঈদের নির্যাতনে অতিষ্ঠ ছিলো সাধারণ বাংলাদেশী তাই আবু সাঈদের মৃত্যুর পর কেউ ইন্না-লিল্লাহ পড়েনি।তাই মারা যাওয়ার পর এসব অভিযোগ না লিখায় ভালো।

উপসংহারঃআবু সাঈদের মৃত্যু থেকে সাবধান হউন তথাকথিত কমিউনিটির নামে অপহরণের সাথে জড়িত নেতারা।যারা খুন অপহরণ সহ নানাভাবে সাধারণ বাংলাদেশী নাগরিককে দক্ষিণ আফ্রিকায় হয়রানি করে আসছেন।যদি ফিরে না আসেন তাহলে ঘুমের মধ্যে আপনাদেরও মৃত্যু হবে।নিজেও মৃত্যুর সময় কলেমা পড়তে পারবেননা আবার সাধারণ মানুষ ও ইন্না-লিল্লাহ পড়বেনা।

সুতারাং আবু সাঈদের মৃত্যু থেকে শিক্ষা নিয়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসুন আর তওবা করুন মহান আল্লাহর কাছে।